শুক্রবার | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম

চুনারুঘাটে চা শ্রমিকদের কষ্ঠ লাগবে ব্যারিস্টার সুমনের ব্যাক্তিউদ্যোগে ৩৬ তম ব্রিজ উদ্ভোধন

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২১, ২০২২




জার্নাল প্রতিবেদক॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রামগঙ্গা চা বাগানের শ্রমিকদের বসতভিটা থেকে প্রধান সড়কে যাতায়াতের জন্য ছড়ার উপর একটি ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল শত শত চা শ্রমিকদেরকে। ১৪ বছর পূর্বে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারীভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও নির্মাণ ত্রুটির জন্য সেটি উদ্বোধনের আগেই ধ্বসে পড়ে। এর পর অনেক জনপ্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তারা সেখানে ব্রীজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

পরে শ্রমিকরা যোগাযোগ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সাথে। সুমন তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে একটি কাঠের সেতু তৈরি করে দেন। এতে শ্রমিকদের কষ্ঠ লাগব হয়। কিন্তু দেড় বছর পর প্রবল বর্ষণে ব্রীজটি ধ্বসে পরে। খবর পেয়ে সুমন সেখানে আরেকটি কাঠের সেতু তৈরি করে দেন। দুই বছর পর সেটিও ভেঙ্গে যায় প্রবল বর্ষণে। এবার আর কাঠ নয় ব্যারিস্টার সুমন ব্যাক্তিগত অর্থায়নে সেখানে তৈরি করেন একটি পাকা সেতু। শত শত চা শ্রমিকের উপস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে উদ্বোধন হয় সেই সেতুটি। সেটি সুমনের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তৈরি ৩৬তম সেতু। এর মাঝে ৫টি পাকা এবং ৩১টি হল কাঠের সেতু।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে ফিতা কেটে উদ্বোধক হিসাবে ব্রিজটি উদ্ভোধন করেন ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান নার্গিস আহমেদ।

চুনারুঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লষ্করের সভাপতিত্বে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি বশির আহমেদ।

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, ইউপি চেয়ারম্যান রুমন ফরাজি ও নারী নেত্রী এ্যানি লস্কর বক্তৃতা করেন।

রামগঙ্গা চা বাগানের শ্রমিক মীনা কর্মকার বলেন, এই সেতুটি তৈরি হওয়ায় আমাদের প্রধান সড়কে যাতায়াতে ১ ঘন্টা সময় সাশ্রয় হবে। সেতু না থাকলে বর্ষাকালে অনেক কষ্ট হত যাতায়াত ও গবাদিপশু নিয়ে যেতে। তিনি ব্যারিস্টার সুমনের প্রতি বাগানবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ২০১৬ সালে চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ চা বাগানের সিনাইবিলে প্রথম ব্যাক্তিগত উদ্যোগে কাঠের ব্রীজ তৈরি করেছিলাম। ৩৬টি ব্রীজ করতে আমার কোটি টাকার মত খরচ হয়েছে। ভাঙ্গা রাস্তা মেরামতেও আরও কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আমার স্বপ্ন হল ব্যাক্তিগত উদ্যোগে অন্তত ১শ সেতু তৈরি করা। সুযোগ পেলে প্রমত্তা খোয়াই নদীর উপরও ব্যাক্তিগত উদ্যোগে সেতু করার ইচ্ছা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার দরিদ্র মানুষের এই কষ্ঠ লাগবের পাশাপাশি লেখাপড়া ও খেলাধুলার উন্নয়নে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নিজের উপার্জনের অর্থ যতটুকু পরিবারের জন্য প্রয়োজন তার অতিরিক্ত অর্থ জনকল্যাণে ব্যয় করাই আমার ইচ্ছা।

প্রধান অতিথি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি বশির আহমেদ ব্যারিস্টার সুমনের এই উদ্যোগ দেখে উচ্ছাশ প্রকাশ করেন এবং নিজেও এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এতদিন ফেইসবুকে দেখেছি ব্যারিস্টার সুমনের ভালকাজ। আর স্বচক্ষে দেখতে হেলিকপ্টারে করে এসে যা দেখেছি তা অতুলনীয়। সুমন প্রমাণ করেছেন তিনি হাজার হাজার নেতারছেয়েও প্রভাবশালী। সুমনের মাধ্যমে একটি এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষ এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পেয়েছে।

আজকের সর্বশেষ সব খবর